নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা। এ মহান নেতা বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় এবং বাঙালি জাতিকে আত্মমর্যাদাশীল জাতিতে রূপান্তরে আমৃত্যু লড়াই-সংগ্রাম করে গেছেন। অন্যায়, অনিয়ম এবং দুঃশাসনের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সবসময় সোচ্চার।
সোমবার (১৫ আগস্ট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য তাঁর ভাষণের শুরুতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, রাজনীতির মহাকবি, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট হায়েনাদের হাতে নির্মমভাবে শহীদ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যসহ অন্যান্য শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
উপাচার্য বলেন, জাতির পিতার দূরদর্শীতা, বিচক্ষণতা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও ত্যাগ-তিতিক্ষার ফসল বাংলাদেশ। এ বিশ্বনেতাকে সপরিবারে হত্যা করে হায়েনার দল চেয়েছিল বাংলাদেশকে বিশ্ব মানচিত্র থেকে মুছে ফেলতে কিন্তু তাদের এ বাসনা পূরণ হয়নি। বঙ্গবন্ধু তনয়া প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত। এ ধারা অব্যাহত রাখতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে দৃশ্যমান ভূমিকা রাখার জন্য উপাচার্য আহবান জানান।
সকাল ১০:০০ টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার ও মাননীয় উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর বেনু কুমার দে। অতঃপর পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চবি অনুষদ সমূহের ডিনবৃন্দ, চবি শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, হলসমূহের প্রভোস্টবৃন্দ, বিভাগীয় সভাপতি, ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকবৃন্দ, আইকিউএসি, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ (হলুদ দল), চবি অফিসার সমিতি, কর্মচারী সমিতি, কর্মচারী ইউনিয়ন, বঙ্গবন্ধু পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ। এরপর বেলা ১১:০০ টায় চবি উপাচার্য দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু’র জীবন ও কীর্তি’ এবং ‘শোকাবহ ১৫ আগস্ট’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর বেনু কুমার দে ও চবি বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. মুনতাসীর মামুন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসান এবং সঞ্চালনা করেন চবি প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া।
আলোচনা সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে পাঠ করেন চবি কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব হাফেজ আবু দাউদ মুহাম্মদ মামুন, পবিত্র গীতা থেকে পাঠ করেন চবি রসায়ন বিভাগের প্রফেসর ড. তাপসী ঘোষ রায়, পবিত্র ত্রিপিটক থেকে পাঠ করেন চবি পালি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব অরূপ বড়ুয়া ও পবিত্র বাইবেল থেকে পাঠ করেন চবি আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক জনাব জেসী ডেইজী মারাক। এরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবার এবং ঐদিন শাহাদাত বরণকারী সকল শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন চবি’র সাবেক উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোঃ আলাউদ্দিন, চবি আইন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আবদুল্লাহ আল ফারুক, চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. সেলিনা আখতার, সিনেট সদস্য প্রফেসর ড. মোঃ সেকান্দর চৌধুরী, সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নাসিম হাসান, আলাওল হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফরিদুল আলম, ফিজিক্যাল এডুকেশন এন্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর, অফিসার সমিতির সভাপতি রশীদুল হায়দার জাবেদ, কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোঃ সুমন ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী হোছাইন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্ট শাহাদাত বরণকারী অন্যান্য শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে ফজরের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল মসজিদে দোয়া মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের স্ব স্ব উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। দুপুর ১২:৩০ টায় চবি কেন্দ্রীয় মন্দিরে ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট ঘাতকদের হাতে নির্মমভাবে নিহত বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যসহ অন্যান্য শহীদদের স্মরণেএবং দেশের অব্যাহত অগ্রগতি ও মঙ্গল কামনায় গীতাপাঠ অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া, অনুষ্ঠানে আগত বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যবৃন্দ কালো ব্যাজ ধারণ এবং মাস্ক পরিধান করে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
চবি প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠানমালায় চবি সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ, অনুষদের ডিনবৃন্দ, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, রেজিস্ট্রার, কলেজ পরিদর্শক, হলের প্রভোস্টবৃন্দ, বিভাগীয় সভাপতি, ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকবৃন্দ, প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরবৃন্দ, পরিচালক ছাত্র-ছাত্রী নির্দেশনা ও পরামর্শ, শিক্ষকবৃন্দ, অফিস প্রধানবৃন্দ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতৃবৃন্দ, অফিসার সমিতি, কর্মচারী সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।